বাগরাম বিমানঘাঁটি নিয়ে কোনো চুক্তি ‘সম্ভব নয়’ বলে জানিয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা গতকাল রোববার বলেছেন, আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি মাটি নিয়েও কোনো চুক্তি সম্ভব নয়।”
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক এই মার্কিন ঘাঁটিটি ফেরত পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এমনকি ফেরত না দিলে ‘ফল ভালো হবে না’ বলেও হুমকি দেন তিনি।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের উত্তরে অবস্থিত বাগরাম ছিল তালেবানের বিরুদ্ধে ২০ বছরের যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রমের কেন্দ্র। চার বছর আগে মার্কিন সেনারা এই ঘাঁটি ত্যাগ করে।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘যদি আফগানিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত না দেয়, তবে খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে।”
রোববার আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান স্টাফ ফাসিহুদ্দিন ফিতরাত স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কিছু মানুষ একটি রাজনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে ঘাঁটিটি ফেরত নিতে চায়।’ তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি মাটি নিয়েও কোনো চুক্তি সম্ভব নয়। আমাদের এটির দরকার নেই।’
পরে এক সরকারি বিবৃতিতে আফগান সরকার সতর্ক করে দেয় যে, ‘আফগানিস্তানের স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ।’
২০২১ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে এবং এর আগে ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ২০২০ সালে তালেবানের সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসেবে মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা বাগরাম থেকে সরে আসে। গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়ার পর মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আফগান সামরিক বাহিনী ভেঙে পড়ে এবং তালেবান আবার ক্ষমতায় আসে।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি বাগরাম পুনর্দখলের জন্য মার্কিন সেনা পাঠানোর কথা বিবেচনা করছেন কিনা সে বিষয়ে কিছু বলবেন না। তবে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আফগানিস্তানের সঙ্গে কথা বলছি, এবং আমরা এটি ফেরত চাই, এখনই ফেরত চাই। আর যদি তারা তা না করে, তাহলে আমি কী করব তা আপনারা জানতে পারবেন।’
বাগরাম একটি বিশাল, বিস্তৃত স্থাপনা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অন্যান্য সংস্থাগুলো বারবার বাগরামে মার্কিন বাহিনীর দ্বারা পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। বিশেষ করে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর সময় আটক বন্দীদের প্রতি অমানবিক নির্যাতনের অনেক প্রমাণ পরবর্তীতে গণমাধ্যমে এসেছে।