দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ বদলে যাওয়ার পর সিলেটের বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সরকারের পতনের পরপরই একের পর এক নেতা আত্মগোপনে যেতে শুরু করেন। অনেকে রয়েছেন দেশের বাইরে, আবার কেউ কেউ থেকে গেছেন দেশেই, তবে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অনেকটাই দূরে।
বিশ্বস্ত দলীয় সূত্র বলছে, এসব নেতাদের মধ্যে কেউ যুক্তরাজ্যে, কেউ ভারত কিংবা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করে এই প্রতিবেদনে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
দেশের বাইরে যারা
রাজনৈতিক উত্তাপের মাঝেই সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী পাড়ি জমান লন্ডনে। একই সময়ে দেশ ছাড়েন সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বর্তমানে অবস্থান করছেন ভারতের কলকাতায়।
ভারতের বিভিন্ন শহরে আশ্রয় নেওয়া নেতাদের মধ্যে আছেন—
- কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল
- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান
- জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাধিক নেতা
- সিলেটের বিভিন্ন পর্যায়ের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ
যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন আরও কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন:
- সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী
- সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান
- জেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক রনজিত চন্দ্র সরকার
- সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা
- মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ
দেশে থেকেও আত্মগোপনে
দেশেই রয়েছেন বহু নেতা, তবে সক্রিয়ভাবে মাঠে নেই কেউ। নিরাপত্তার কারণে তাঁরা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান পরিবর্তন করছেন। অনেকে সরাসরি মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন। ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে দলের একাধিক কার্যালয় আক্রান্ত হয়েছে, নেতাদের বাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
ভার্চুয়াল যোগাযোগে নেতৃত্ব
দেশে না থেকেও অনেক নেতা দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে দিচ্ছেন দিকনির্দেশনা, সমন্বয় করছেন নীরবভাবে। লন্ডন থেকে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নেতা-কর্মীদের খোঁজখবর রাখছেন, ঈদ উপলক্ষে কারাবন্দীদের পরিবারকে সাহায্যও করেছেন।
অন্যদিকে, ভারত ও ইউরোপে থাকা নেতারাও নির্বাচনী এলাকা ও কর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন, কেউ ফেসবুকে সক্রিয়, কেউ হোয়াটসঅ্যাপে।
দলীয় ভবিষ্যৎ ও প্রস্তুতি
নেতারা বলছেন, দলীয় প্রধানের আহ্বানে তাঁরা যে কোনো সময় দেশে ফিরতে প্রস্তুত। ততদিন পর্যন্ত সংগঠনের ভেতরে শৃঙ্খলা রক্ষা ও বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাবেন।