সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর অন্তত অর্ধেক এলাকা দখল করেছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন শহর আলেপ্পো। আজ পুরোটাই কার্যত ধ্বংসস্তূপ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ও তথ্যকেন্দ্র সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের পরিচালক রামি আবদুল রাহমান জানিয়েছেন এ তথ্য। সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের কাছে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। প্রায় দেড় দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। একদিকে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনী। অন্যদিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। দুই পক্ষের সংঘর্ষে ঝড়ছে রক্ত। এতে সেনাসহ দুই শতাধিক লোক নিহত হয়েছেন। গত কয়েক বছরের মধ্যে সিরিয়ার সরকারে বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের এটি সবচেয়ে বড় তাণ্ডব। ২০১৬ সালে দেশটির সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করে। এরপর প্রথমবারের মতো বিদ্রোহীরা আলেপ্পোতে পৌঁছেছে। সিরিয়ার সরকার ইতিমধ্যে আলেপ্পোর বিমান বন্দর এবং শহরের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সব সংযোগ সড়ক বন্ধ ঘোষণা করেছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নির্দেশেই নেওয়া হয়েছে এসব পদক্ষেপ।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের কট্টর বিরোধী বলে পরিচিত হায়াত তাহরির আল-শামের যোদ্ধারা ইতোমধ্যে শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান নিয়েছে বলেও জানা গেছে। গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াই এখন কার্যত বিদ্রোহীরা হাইজ্যাক করে নিয়েছে। জানা গিয়েছে, গত বুধবার থেকে আলেপ্পোয় সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে বিদ্রোহীরা। ময়দানে সাফল্য আসতেই শুক্রবার এক ভিডিও বার্তা দিয়েছে আল-শামের প্রধান আবু মহম্মদ আল জোলানি। তার কথায়, “আমরা দ্রুত আলেপ্পো দখল করব।” পালটা বিবৃতিতে সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদীদের হামলা রুখে দেওয়া হয়েছে। রাশিয়া অবশ্য নিজেদের অন্যতম পুরোনো ও বিশ্বস্ত মিত্র বাশার আল আসাদকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে এই বিদ্রোহীদের প্রতিহত করতে নতুন সেনা ইউনিট পাঠানো হবে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিরিয়ায় এসে পৌঁছানোর কথা সেসব ইউনিটের। সিরিয়ার সেনাবাহিনীর একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, মস্কোর কাছ থেকে এ প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর যেসব এলাকায় বিদ্রোহীরা প্রবেশ করেছে, সেসব স্থান থেকে সেনাদের সরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ।