Home Uncategorized জীবন দিবো-তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে দিবো না: ডা. শফিকুর রহমান

জীবন দিবো-তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে দিবো না: ডা. শফিকুর রহমান

by Londonview24
0 comment

 জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে ইস্পাত কঠিন ঐক্য চাইলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, দেশের আকাশে কালো মেঘ জমেছে। দেশের আাকাশে কালো শকুন দেখা যাচ্ছে। তাদেরকে কোনোরকম সুযোগ দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশে আওয়াজ উঠেছে জীবন দিবো- তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে দিবো না। তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, আপনারা কী প্রস্তুত?  লাখো কন্ঠে জবাব আসে জি, আমরা প্রস্তুত। তিনি বলেন, আমরা চাই, জাতীয় স্বার্থে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে ইস্পাত কঠিন ঐক্য।

আজ শনিবার (৩০ নভেম্বর) সাতক্ষীরা জেলার ঐতিহাসিক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা সদরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, কোরআনের কথা বলতে গিয়ে, আল্লাহর দ্বীনের কথা বলতে গিয়ে, সত্য কথা বলতে গিয়ে সাতক্ষীরা জেলার মতো বাংলাদেশের আর কোনো জেলা এতো জীবন এবং রক্ত উপহার দেয়নি। এজন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কাছে সাতক্ষীরার মর্যাদা অনন্য উচ্চতায়। আল্লাহ যেন এই জেলার মর্যাদা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি করে দেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ আল্লাহ তায়ালার বড় মেহেরবানি। দুনিয়ার খুব কম জায়গাতেই এমন দেশ রয়েছে। আমরা এমন একটি দেশ পেয়েছি  যার  মাটির উপর অফুরন্ত সম্পদ। মাটির গর্ভে অফুরন্ত সম্পদ,  সমুদ্রেও অফুরন্ত সম্পদ। কিন্তু আমাদের সম্পদগুলো জনগণের উপকারে আসছে না। যারা জনগণের কর্তা হয়ে ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন সময় দেশ শাসন করেছেন; তারা জনগণের সম্পদ সুকৌশলে চুরি করে লুন্ঠন করে পকেটে ঢুকিয়েছেন। এজন্য বাংলাদেশের জনগণ তাদের হিস্যা পায়নি।

আমীরে জামায়াত উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালে শহীদ পরিবারের সাথে দেখা করতে এসেছিলাম। সকাল ৯/১০ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আমি দেখেছি এই জেলার রাস্তাঘাট একদমই ভাঙাচুরা। মোটর সাইকেলে করে সারা জেলা ঘুরার চেষ্টা করেছি। তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, শাসক দলের কথায় উন্নয়নের জোয়ারে তো দেশ ভাসছে! জোয়ারের সামান্য ছিটেফোটা কী এখানে একটু আসে না? তারা জানায় যে, না আসে না। তারা জানায় বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী সাতক্ষীরাকে বাংলাদেশের অংশ মনে করে না। আপনাদের ওপর তারা জুলুম করেছে। তারা জনগণের  অধিকার দেয়নি। সাতক্ষীরার ওপর জুলুম করেছে। খুন-গুম করেছে। ইজ্জতের ওপর হাত দিয়েছে। সম্পদ লুন্ঠন করেছে। মানুষকে তারা দাসে পরিণত করেছিল। সবচেয়ে খারাপ করেছে সাতক্ষীরায়। শুধু দ্বীনের পক্ষ নেওয়ায় যদি এই অবস্থা হয় তাহলে, হে আল্লাহ দুনিয়া এবং আখেরাতে এই জেলার মর্যাদা বাড়িয়ে দিন।

ডা. শফিকুর রহমান ওয়াদা করে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের মানুষের কাছে ওয়াদাবদ্ধ। আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। সুষম উন্নয়ন দিতে চাই। কেউ চাইলেও. না চাইলেও  তার অধিকার পাবে। লক্ষ যুবক বেকার থাকবে না। শিক্ষা সমাপনীর সাথে সাথে কাজ ধরিয়ে দেওয়া হবে। নৈতিক এবং জাগতিক শিক্ষার সমন্বয় হবে।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেদ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. খলিলুর রহমান মাদানী, জেলা নায়েবে আমীর নুরুল হুদা, ডা. মাহমুদুর হক, খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, অধ্যক্ষ মাওলানা মশিউর রহমান, খুলনা মহানগর আমীর অধ্যাপক মাফুজুর রহমান,বাগের হাট জেলা আমীর মাওলানা রেজাউল করিম প্রমুখ। কর্মী সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলার আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল।

জেলা সেক্রেটারি আজিজুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ তিন বার ভোট চুরি ডাকাতি এবং প্রশাসনের লোকজনকে দিয়ে করিয়েছে। দেশের মানুষের অধিকার হরণ করেছে। তিনি বলেন নতুন বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ।

কর্মী সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি গাজী সুজাআত আলীম অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ, মাওলানা ওসমানগণি, সাতক্ষীরা শহর শাখা সভাপতি আল-মামুন ও জেলা শাখা শিবিরের সভাপতি ইমামুল ইসলাম প্রমূখ।  

বেলা তিনটায় ডা. শফিকুর রহমান সম্মেলনের সভামঞ্চে আসেন। ততক্ষণে কর্মী সম্মেলনের মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের অলিগলি মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে যায়। শহরের অলিগলি পেরিয়ে বাসাবাড়ীর ছাদে ওঠেও কর্মী সম্মেলনের ভাষণ শোনার চেষ্টা করেন। এসময় পুরো সাতক্ষীরা শহর উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়।

এদিকে এর আগে জেলা শহরের পল্লীমঙ্গল হাইস্কুল মাঠে রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ডা. শফিকুর রহমান। সেখাানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

You may also like

Leave a Comment